সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এ মামলার প্রধান তিন আসামি রিমান্ডে থাকা ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত। আজ শুক্রবার পৃথকভাবে তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে র্যাবের তদন্ত দল। এ সময় নিজেদের মতো করে ঘটনার বর্ণনা দেন আসামিরা।
ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে র্যাবের তদন্ত দল
শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারওয়ারের নেতৃত্বে একটি দল অভিযুক্ত আসামিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তখন ঘটনাস্থলের কাছে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তদের কাছে ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে চান তদন্ত কর্মকর্তা। পরে নিজেদের মতো করে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন অভিযুক্তরা।
এ বিষয়ে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, কেনো এই ফায়ারিংটা (গুলি) হয়েছিল? এত অল্প সময়ের মধ্যে কী এমন ঘটেছিল যে সিনহা গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন? কিংবা লিয়াকত যেটা বলছে, পিস্তল তাক করে ফেলেছিলেন। এই ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে কী এমন হয়েছিল? পিস্তল তাক করার মতো পরিস্থিতি আসলেই সৃষ্টি হয়েছিল কি না? আর তিনিই বা কেনো ফায়ার করলেন? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলছে।
ইতোমধ্যে অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগৃহীত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এমনভাবে তদন্ত করতে চাই, যেন কোনোভাবেই কোনো নির্দোষ ব্যক্তি সাজা না পান এবং কোনো দোষী ব্যক্তি ছাড় না পায়। রিমান্ডে থাকা আসামি, সাক্ষী ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু এখনই কিছু বলা যাবে না। নয়তো তদন্তে ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে।
মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই সময় বলা হয়, রাশেদ সিনহা তার পরিচয় দিয়ে 'তল্লাশিতে বাধা দেন'। এরপর তিনি 'পিস্তল বের করলে' দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথাও জানায় পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
পরে ঘটনার বিচার চেয়ে টেকনাফ উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারহার আদালতে ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। বর্তমানে এ মামলার তদন্ত করছে র্যাব।
0 Comments